"আমাদের লন্ডনের স্বেচ্ছা নির্বাসনের দিন গুলির গল্প।"
- Suklatithi
- Jun 19, 2020
- 2 min read
Updated: Jun 22, 2020
চেরী, ড্যাফোডিল, টিউলিপ রোজমেরী ফুলের সম্ভারে যখন লন্ডনের পার্ক গুলো সেজে ওঠে তখন ক্যালেনডারের দিকে না তাকিয়েও মন গুন গুন করে ওঠে বসন্ত এসে গেছে। গ্রীন উইচ পার্ক ঢেকে গেছে গোলাপী ফুলে। ক্যালেনডারের দিকে না তাকিয়েও বুঝতে পারি সামনই ইস্টারের ছুটি। মনটা ও খুশীতে ভরপুর, গরমের ছুটিতে অনেক দিন পর কলকাতা যাব। টিকিট কাটা ও হয়ে গেছে জুলাই মাসের শেষের দিকে। এবার ইস্টারের ছুটিতে বেড়াতে যাবার plan , programme শুরু হলো।


আমার এই দেশে প্রায় 10 বছর হয়ে গেল। কলকাতার পর লন্ডন আমার প্রিয় শহর। কখন যে এই শহরটি আমার বড় আপন হয়ে উঠেছে জানিনা। আমরা বাঙ্গালীরা মিলে মিশে এই শহরে বেশ আছি।আমাদের কাজ কর্ম ,বেড়ানো, খাওয়া পুজোয় আড্ডা, shopping, মাঝে মাঝে সামাজিক কিছু কাজকর্ম সব নিয়ে বেশ ছিলাম। হটাৎ ভিলেন রুপী কোভিড 19 র আবির্ভাব আমাদের একদম স্তব্ধ করে দিয়েছে|

এখনকার বসন্তের আগমনে দিন কিছুটা বড় হতেই সব আমরা বেড়িয়ে পড়ি ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অসংখ্য পার্কে। আর সপ্তাহান্তের ছুটিতে দু তিন ঘন্টার ড্রাইভে কোন সমুদ্রতটে বা অন্যকোথাও। আর ছুটি কাটিয়ে আবার নতুন উদ্যমে জীবন যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়া।এই বার সব কিছু বন্ধ। কলেজ বন্ধ। বাড়ি থেকেই student দের lessons দেওয়া শুরু হয়েছে।আমাদের Apartment টির পাশেই ওয়েম্বলী স্টেডিয়াম।ব্যালকনীর ঠিক সামনেই SSC Arena আর স্টেডিয়াম এর উজ্জ্বল নীল আলোর রিং টা সবসময় আমাকে বড় আকৃষ্ট করে । জনকোলাহলে পরিপুর্ন রাস্তা টি এখন ঘুমিয়ে আছে।নিজেদের নিশ্বাসের আওয়াজে নিজেরাই চমকে উঠছি।



কয়েকদিন আগে Royal London Hospital থেকে থেমস র ধার দিয়ে যখন ফিরছিলাম , London Eye, Buckingham Palace, Trafalgar Square দেখে আমরা নিজের চোখ কে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। রুপকথার গল্পের কোন এক যাদুকর যেন তার যাদুদন্ডের ছোয়ায় সমস্ত দেশ টা কে ঘুম পাড়িয়ে দিয়েছে।


করোনা যুদ্ধে আসল যোদ্ধা আমাদের NHS ডাক্তারেরা আর সমগ্র স্বাস্থ্য কর্মীরা। জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষনে দাড়িয়ে প্রানপন লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন এই মারন যুদ্ধের বিরুদ্ধে ।নিজেদের প্রানের বিনিময়ে কত করোনা- আক্রান্ত রোগীকে ফিরিয়ে দিয়েছেন নতুন প্রান ।কোন প্রশংসাই এনাদের জন্য যথেষ্ট নয়। আমার অন্তরের গভীর শ্রদ্ধা ও প্রনাম এই মহাপ্রানদের উদ্দেশ্য এ।আমার পরম সৌভাগ্য আমরা এক দিনের জন্য হলেও Royal London Hospital r Medical Staff der lunch র একটু ব্যবস্থা করতে পেরেছিলাম।


হসপিট্যাল র ডাক্তারদের খাবার দিয়ে ফেরার সময় আমাদের প্রিয় কর্মব্যাস্ত শহরের শান্ত নিদ্রিত কিছু ছবি দিলাম ।

ছুটি ছুটি ছুটি বড় প্রিয় ছিল কথাটি। জীবনে প্রথমবার ছুটি শব্দটি বড় অনাকাঙ্খিত।এমন ছুটি আর চাইনা জীবনে।কর্ম মুখর হোক জীবন আর স্পর্শে ফিরুক আপনজন।
শঙ্খচিল কবিতাটি মনে আছে?
“আমাদের দেখা হোক মহামারীশেষে। আমাদের দেখা হোক জিতে ফিরে এসে। আমাদের দেখা হোক জীবানু ঘূমালে । আমাদের দেখা হোক সবুজ সকালে।...........আমাদের দেখা হোক বিজ্ঞান জিতলে। আমাদের দেখা হোক মৃত্যু হেরে গেলে। আমাদের দেখা হোক সুস্থ শহরে।”🙏🙏
















Kommentarer